রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

পৃথিবীর বিলুপ্ত ধর্ম ও বিলুপ্ত দেবতাদের ইতিহাস : প্রাচীন অ্যাজটেক ধর্ম # ৮৯


পৃথিবীর বিলুপ্ত ধর্ম ও বিলুপ্ত দেবতাদের ইতিহাস : 
প্রাচীন অ্যাজটেক ধর্ম
‘অ্যাজটেক’ সভ্যতা যা ২০১৪ সনে বিলুপ্তি হয়ে গিয়েছিল এবং সঙ্গে বিলুপ্ত হয়েছিল অ্যাজটেক দেব-দেবীও, যাদেরকে তারা ভক্তি আর উপাসনা করতো সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা হিসেবে, পূজা করতো তাদের নানা অনুসঙ্গে জীবনের নিয়ন্ত্রক হিসেবে। আজটেররা মেক্সিকো থেকে দক্ষিণে গুয়াতেমালা পর্যন্ত তাদের রাজ্য বিস্তার করেছিল ১৪২৫ থেকে ১৫২১ সনের দিকে। ১৫২১ সনে স্পানিশরা আজটেকদের রাজ্য দখল ও বসবাসকারীদের হত্যা করলে এদের পতন ঘটে। আজটেকদের রাজধানীর নাম ছিল ‘টেনোচতিৎলান’ এবং তাদের ভাষার নাম ছিল ‘নাহুতল’। এদের জনসংখ্যা ছিল আনুমানিক ২০-লাখ। এরা কৃষি প্রধান প্রকৃতি পূজক ছিল। অ্যাজটেকরা বিভিন্ন দেবতার মধ্যে যুদ্ধ ও সূর্যের দেবতা হিসেবে ‘হুইটজালকে’ মানতো। এর পরের ক্ষমতাধারী দেবতার নাম ছিল বাতাসের নিয়ন্ত্রক মঙ্গল দেবতা ‘কিটযাল’ ও মাটির দেবী ‘কোটলি’। তারা ভূমি, বৃষ্টি ও সূর্যকে দেবতা মনে করতো এবং দেবতাদের সন্তুষ্টির জন্যে নরবলি দিতো।

নরবলি প্রকটভাবে বিদ্যমান ছিল এ্যাজটেক সমাজে। নারী, পুরুষ, শিশু সবাইকে বলি দিতো দেবতার সামনে। এ সমাজে প্রধান ধর্মীয় মন্দির ছিল চৌকোনা পিরামিড। যাতে উপাসনা ছাড়াও পিরামিডের মাথায় ছিল পাথরের তৈরী ‘বলির বেদী’। তারা বলির মানুষটিকে শিরোচ্ছেদের পরিবর্তে তার সারা শরীরে বিশেষ লাল ও নীল রং মেখে তাকে বেদিতে শুইয়ে জীবিত অবস্থায়ই তার হৃদপিন্ড কেটে বের করে দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতো। আ্যজটেক সমাজে সম্রাটের চেয়েও সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিল মন্দিরের পুরোহিত। তারা মনে করতো, সূর্যকে প্রত্যহ পূজা না করলে বা সূর্য অস্তুষ্ট হলে পরদিন আর সূর্য উঠবে না এবং অন্ধকারও কাটবে না। সাধারণত বলি হিসেবে কয়েদী বা মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত কাউকে দেবতার সামনে উৎসর্গ করা হতো। আজটেক ধর্ম যাজকগণ বলির কার্যাবলী সম্পন্ন করতো। আজটেকগণ চাকা আবিষ্কার করতে না পারলেও, উন্নততর ক্যালেন্ডার তৈরী করেছিল। তাদের ক্যালেন্ডারের কেন্দ্র ছিল সূর্য। সূর্যের চারদিকে বিভিন্ন দিক ও স্বর্গ চক্রাকারে সাজানো ছিল।

তারা গাছের বাকলে দেবতাদের উদ্দেশ্যে নানা ধর্মীয় বাণী চিত্রকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতো। তারা পিকটোগ্রাফ বা চিত্র দ্বারা মনের ভাব প্রকাশ করতে পারতো। ১০০-৬০০ সাল পর্যন্ত আজটেক এলাকা টিওটিহুকানরা শাসন করতো। এরপর এলাকার টিওটিহুকানদের হটিয়ে ঐ এলাকা দখলে নেয় টলটেক জাতি। ১৩ শতকে ‘নাহুতলভাষীরা’ এদেশ দখল করে নেয় পুনরায়, যারা পরবর্তীতে আজটেক নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৫১৯ সনে স্পানিশরা আজটেকদের শত্র“ টলাক্সালানদের সাথে আঁতাত করে আজটেকদের পরাজিত করে।

ম্যাক্সিকোর ‘সূর্যের পিরামিড’ এজটেকদের বানানো বলে মনে করা হয়। ধারণা করা হয় এই শহর গড়ে ওঠে ‘এজটেক’ জাতিগোষ্ঠী আঠারো হাজার বছর পূর্বে। এই এজটেক জাতিগোষ্ঠীর ভাষার নাম ছিল ‘নাহহুয়াতল’। এই এজটেক জাতিগোষ্ঠী নির্দিষ্টভাবে কবে এসেছিল এ অঞ্চলে তার নির্দিষ্ট প্রমাণ না পাওয়া গেলেও ধারণা করা হয় ‘টিয়েডিওয়াকেন’ জাতির পরে এই এজটেক জাতিগোষ্ঠীর উদয় ঘটে। বেশ কুয়াশাচ্ছন্ন এই অঞ্চলের ইতিহাস। আর টিয়ডয়াকেন জাতীগোষ্ঠী সম্ভবত ১০০ বি.সি বিলুপ্ত হয়।

এজটেক জাতিগোষ্ঠী যে শহর গড়ে তোলে তা মেক্সিকো শহর থেকে ৫০ কিমি দূরে ৮ স্কয়ার মাইলজুড়ে অবস্থিত। আর এই শহরের জনসংখ্যা লাখের উপরে ছিল। এই পিরামিডের মোটামটি বাইরের সম্পূর্ণ ম্যাপ বর্তমান সময়ে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ভেতর দিককার মাত্র ৫ শতাংশ এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করা হয়েছে। আর বাদবাকি এখন পর্যন্ত সবার আড়ালে রয়ে গেছে।

কারো মতে, এই পিরামিড তৈরি করেছিল ‘টোলটেক’ জাতিগোষ্ঠী। কিন্তু আবার অনেক বিজ্ঞজনের মতে, এই টোলটেক জাতিগোষ্ঠী আবার টিয়েডিওয়াকেন জাতিগোষ্ঠীর অনেক পরে এসেছে তাই তাদের পক্ষে এটি আবিষ্কার করা সম্ভব নয়। মানে বুঝতেই পারছেন কেমন রহস্যে ঘেরা এই পিরামিড। এখন পর্যন্ত কেউ সঠিকভাবে বলতেই পারে নাই কে তৈরি করেছিল এ বিশাল পিরামিড। বর্তমান সময়ে পৃথিবীর বুকে এমন একটি রহস্যে ঘেরা জায়গা থাকবে আর মানুষ সেটা জানার চেষ্টা করবে না এমনকি হতে পারে? না মোটেও না। এ কারণে ‘প্রফেসর সাবুরো সুজিয়ামা’ যিনি জাপান ইউনিভার্সিটি থেকে এসেছেন আর ‘রুবেন কাবরেরা’ যিনি ম্যাক্সিকান প্রত্নতত্ত্ববিদ এই দুজনে মিলে এই পিরামিডে সর্বশেষ খোঁজাখুঁজি করেন আর আবিষ্কার করেন নতুন নতুন অনেক তথ্য।

এই পিরামিডের ১ম তলার নিচে কাঁদামাটি আর পাথরের স্তরের নিচে কিছু রুম পাওয়া যাওয়া যায়। আর এই রুমগুলোর দেয়াল লিখন আর ডিজাইন দেখে মনে হয় যেন তা টিয়েডিওয়াকেন জাতিগোষ্ঠীর বানানো। কেননা এখানে দেবতাদের উদ্দেশে পশু ও নর বলি দেয়ার জায়গা রয়েছে। যা টিয়েডিওয়াকেন জাতিদের একটি ধর্মীয় দিক। মানে এক কথায় বললে হয় এখানে টিয়েডিওয়াকেনদের একটা মন্দির পাওয়া গেছে। আর এই মন্দিরে আরেকটু খোঁজাখুঁজি করার পর কি পাওয়া গেছে জানেন? স্তূপ করে রাখা মানুষের মাথার খুলি। এসব মানুষকে বলি দেয়া হয়েছিল দেবতাদের উদ্দেশে। কি মনে হচ্ছে টিয়েডিওয়াকেন জাতিগোষ্ঠী বানিয়েছিল এই পিরামিড? না এখনো তা নিঃসন্দেহে বলা সম্ভব নয় কেননা ওই যে বললাম মাত্র ৫ শতাংশ আবিষ্কার হয়েছে। কে বানিয়েছিল আর কেন বানিয়েছিল তা অনিশ্চিত থাকলেও এটি যে মানুষের তৈরি এক অসম্ভব সুন্দর স্থাপনা তা বলার নিশ্চয়ই অপেক্ষা রাখে না।

তারা যেসব দেবদেবীদের মানতো তারা ছিল : Aztec-দের ২০০ এর বেশি দেবদিবী ছিল। তার মাঝে প্রধান কজন ছিলো নিম্নরূপ :

Xochiquetzal was an Aztec goddess of love.
Huitzilopochtli was the Aztec god of the obsidian knife who sprang forth from his mother's belly to kill his siblings.
Quetzalcoatl was the Aztec creator god
Tezcatlipoca - was the warrior god of the north and the god of sin
Camaxtli - Also known as Mixcoatl-Camaxtli One of the four creator gods,
Jade Skirt - Goddess of lakes
Chalchiuhtlicue is married to the god of rain,
Tlaloc - Known to the Olmec as "Epcoatl", meaning Seashell Serpent;
Xipe Totec - God of suffering and diseases

এ সকল কল্পিত ও বিলুপ্ত দেবদেবীদের নানাবিধ কর্ম বিভাজন ছিল অ্যাজটেক মানুষের কাছে। কিন্তু আজ সব হাস্যকর আর ধুসর পাণ্ডুলিপি। কোথায় গেলে তারা?

1 টি মন্তব্য:

  1. কবে এবং কোথায় অ্যজটেক সভ্যতা গড়ে ওঠে‍ এবং রাজধানীটি কবে গড়ে ওঠৈ

    উত্তরমুছুন