সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

শান্তির বিশ্বের গলারকাঁটা : ইহুদি-মুসলিম দ্বান্দ্বিকতা-সমাধান যেভাবে শেষ পর্ব- ১৮ # ১২০

শান্তির বিশ্বের গলারকাঁটা : ইহুদি-মুসলিম দ্বান্দ্বিকতা-সমাধান যেভাবে [ শেষ পর্ব ]
                      
কট্টর ইসলামপন্থীদের মতই কট্টর ইহুদিরা ধর্মাভিরু ও চরমপন্থী। কোরানের প্রতিটি কথা যেমন বিনা যুক্তিতে অনুসরণীয় কট্টর মুসলিমের জন্য, একইভাবে একজন ধার্মিক ইহুদি তোরাহ বা তাওরাতের প্রতিটি শব্দ আর বাক্য অনুসরণ করে যিহোবা বা স্রষ্টার নির্দেশ হিসেবে। ধর্মীয় পবিত্র পুস্তকে বর্ণনার কারণে মক্কা-মদিনা যেমন মুসলমানের কাছে পবিত্র (এ দু’শহরে নন-মুসলিম প্রবেশ করতে পারে না), একইভাবে তাওরাতের নির্দেশনায় একজন ইহুদির পবিত্র ভূমি হচ্ছে ইসরাইল ও জেরুজালেম নগরী, যার প্রতিষ্ঠা তাদের নবীদেরই হাতে। সুতরাং কোন যুক্তিতে ইহুদিরা ছেড়ে দেবে তাদের প্রতিশ্রুত পবিত্র ভূমি ইসরাইল? যা পাওয়ার জন্য এসিটন উৎপাদনকারী ইহুদি বিজ্ঞানী-রসায়নবিদ কেইম  ওয়াইজম্যান  ত্যাগ করেছিল নারি, বাড়ি আর গাড়ির প্রলোভন, চেয়েছিল তার জাতির হারানো রাষ্ট্র! অবশ্য ইহুদি কেইম  ওয়াইজম্যানের বদলে আবিষ্কারক . রহমান বা আ. কাদের হলে অনুমান করা যায়, তিনি তার স্বজাতির স্বভূম ফিরে পাওয়ার দাবির চেয়ে নারি-বাড়ি-গাড়িকেই প্রাধান্য দিতেন! যেহেতু এতোগুলো মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যে কোনটির নামই তাদের প্রিয় নবীর নামে রাখা হয়নি অথচ ইহুদি মাত্র ১-টি রাষ্ট্র হলেও, রাষ্ট্রটি তাদের নবীর নামে রাখা!  
                        
ইহুদী জাতির উত্থান, বিকাশ, পতন এবং পুনরুত্থানের বিষয়ে নানাবিধ উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত ১৭-টি পোস্ট দেয়া হয়েছে।প্রত্যাশা করতে পারি, আগ্রহী পাঠকগণ সেখান থেকে নানাবিধ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে নিজেরা তাদের মননে বিশ্বের বুকে ইহুদি জাতির টিকে থাকার অব্যাহত সংগ্রামের চিত্র আঁকতে পেরেছেন। একুশ শতকের পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ও ম্যারাথন জাতিগত সমস্যার নাম ইসরাইল-ফিলিস্তিন তথা মুসলিম-ইহুদি দ্বন্দ্ব। বহুকাল প্যালেস্টাইনে ছিল ইহুদিদের আদি নিবাস। ফিলিস্তিন জাতিরা কেনানে আসে ক্রিট দ্বীপ থেকে। বর্তমান সময়ের লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান ও মিশরের বড় অংশই ছিল প্রাগৈতিহাসিক কিংডম অব ইসরাইলের অংশ। ‘তোরাহ’ মতে স্বয়ং ‘যিহোভা’ এই দেশকে দান করেছেন ইহুদিদের জন্যে। কেনান ছিল গড প্রতিশ্রুত ইহুদিদের দেশ। ১০৯৫-৯৭৫ খ্রী.পূর্বে ইহুদীরা এখানে তাদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। নবী দাউদ ও সোলায়মানের আমলে ইহুদীরা হেবরন ও জেরুজালেমে রাজধানী স্থাপন করেছিল। কেনান বা ইসরাইল ধারাবাহিকভাবে দখল করে আসিরিও, ব্যাবিলনিয়ান, মেডেস ও ক্যালডিয়, মিশরীয়, ফিলিস্তিনি, পার্সিয়ান, হেলেনেষ্টিক, রোমান, বাইজেনটাইন, মুসলিম,অটোম্যান, বৃটিশরা পর্যায়ক্রমে। বনি ইসরাইলদের দাস হিসেবে ব্যবহার করে প্রায় সবাই। এই সেদিন ১৯৩৯-৪৫ এইউক্রেনীয় বাহিনী ও হিটলারের হাতে নিহত হয় প্রায় ৬০-লাখ ইহুদি।
                       
ইহুদিদের প্রতি নানা জাতির অত্যাচার আর বৈরিতার কথা বাদ দিলেও, কেবল ইসলাম ধর্মে ইহুদীদের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গী কি তা দেখা যেতে পারে নিচের উদাহরণ থেকে :
                        
‘‘মদিনায় প্রথম মসজিদ বানানোর জন্য নবী (স) ইহুদি বনী নযীর গোত্রের পুরণো পূর্ব পুরুষের কবরসমূহ খুঁড়ে ফেলেন ও খেজুর গাছ কেটে সমতল করে তাতে মসজিদ বানান (বুখারী-৩৬৪২), মুসলমানদের নবী বলেন, ইহুদী ও নাসারাদের আরব থেকে বের করে দেব, এখানে মুসলিম ছাড়া কেউ থাকবে না (দাউদ-৩০২০), ওমর নাজরান ও ফিদকের ইহুদীদের আরব ভূমি থেকে বহিস্কার করেন (দাউদ-৩০২৪), নবী বলেন, আরব উপদ্বীপ থেকে ইহুদী-নাসারাদের অবশ্যই বের করে দিব (তিরমিযী-১৫৫৪), নবী ইহুদীদের এলাকা বায়তুল মিদরাসে গিয়ে বললেন, তোমাদেরকে এই ভূখ- থেকে বহিস্কার করতে চাই, জেনে নাও এ পৃথিবী আল্লাহ ও তার রসুলের এখতিয়ারভূক্ত (বুখারী-২৯২৯), মৃত্যুর প্রাক্কালে নবী উপস্থিত সাহাবাদের উপদেশ দিয়েছিলেন যে, ‘‘আরব উপদ্বীপ থেকে মুশরিকদের বহিষ্কার করবে’’ (বুখারী-২৮২৫), ইহুদীদের বসতি ‘খাইবার’ মুসলমান কর্তৃক জয় করার পর, বিধি অনুসারে সেখানের ইহুদী ভূমি আল্লাহ, তাঁর রসুল ও মুসলমানদের হয়ে যায়। মুসলমানদের নবী ঐ জমি বর্ণিত ইহুদীদের কাছেই অর্ধেক ভাগ-চাষে বর্গা দেন এবং শেষ পর্যন্ত খলিফা ওমর ‘নিজ জমিতে বর্গাচাষী’ ইহুদীদেরকে সিরিয়ার তাইমা ও আরীহায় বহিষ্কার করেন (বুখারী-২১৭০)। খায়বরের খবর শুনে ফদখের ইহুদীরা খায়বরের শর্তে [জীবন রক্ষার্থে ভাগ চাষে] আত্মসমর্পণ করে (দাউদ-৩০০৬), ইহুদীদের ৪০,০০০ খেজুর গাছ সমৃদ্ধ ‘কুতায়বা’কে শক্তি প্রয়োগে দখল করা হয় (দাউদ-৩০০৭), নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে ইহুদী বনু নযীর গোত্র এইমর্মে মুসলমানদের নবীকে প্রস্তাব দেয় যে, ৩০-জন ইহুদী ও ৩০-জন মুসলমান আলেম ধর্মীয় ব্যাপারে বসে সত্যাসত্যা নির্ধারণ করবে। ৩০-ইহুদী আলেম মুহম্মদকে ‘নবী’ হিসেবে মানলে, ইহুদী গোত্র প্রধানসহ সবাই মুসলমান হবে। কিন্তু পরদিন মুসলিমরা তাদের দূর্গ আক্রমন ও অবরোধ করেন এবং তাদেরকে অঙ্গীকার করতে বলেন। ইহুদীরা অঙ্গীকারে অস্বীকৃতি জানালে মুসলমানরা যুদ্ধ অব্যাহত রাখে। পরদিন বনু নযীর গোত্রকে অব্যাহিত দিয়ে, মুসলমানরা বনু কুরায়যার উপর আক্রমন করে। বনু কুরায়যা মুসলমানদের নবীর সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ হলে, নবী কুরায়যাকে ছেড়ে বনু নযীরকে পুন. আক্রমন করেন। বনু নযীরের লোকেরা ‘ইহুদী ধর্মপ্রেমে’ বাধ্য হয়ে দেশত্যাগ করে ও বনু নযীরের খেজুর বাগান মুসলমানদের দখলে যায় (দাউদ-২৯৯৪), পরবর্তীতে মতবিরোধের কারণে বনু কুরায়যার সাথে মুসলমানদের আবার যুদ্ধ লাগে এবং যুদ্ধের পরিণতি হিসেবে ইহুদী পুরুষদের হত্যা, মহিলা+শিশু+মালামাল মুসলমানদের মধ্যে গনিমাতের মাল হিসেবে বন্টন করা হয় (দাউদ-২৯৯৫)। মুসলমানদের হাতে ইহুদীদের চূড়ান্ত পরাজয় বা ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হবে না। যুদ্ধের চূড়ান্তপর্বে মুসলমানদের ভয়ে ইহুদীরা পাথর ও গাছের আড়ালে আত্মগোপন করলেও, সকল গাছ ও পাথর বলে দেবে ‘আমার মধ্যে ইহুদী লুকিয়ে আছে, তাকে হত্যা কর’ কেবল কাঁটাযুক্ত ‘গারকাদ’ গাছ ছাড়া, কারণ গারকাদ ছিল ‘ইহুদীদের গাছ’ (মুসলিম, রিয়াদুস সালেহীন)। নবী নুযায়ের গোত্রের খেজুর বাগান জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন (বোখারী-২৭৯৯), মুসলমানদের নবী বনু নাযীর গোত্রের খেজুর বাগানে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন (তিরমিযী-১৪৯৪), খায়বর বিজয়ের পূর্বে মুসলমানগণ পেট পুরে খেতে পারতো না (বুখারী-৩৯১৫), দীর্ঘ অবরোধের পর দুর্গদ্বার খোলা হলে ইহুদী বনী কুরাইযা গোত্রের যুদ্ধ সক্ষম পুরুষদের হত্যা ও গোত্রের শিশু+নারীদের গণিমাত হিসেবে বন্দী করা হয় (বুখারী-২৮১৬), জনৈক ইহুদী ইসলাম গ্রহণের পর নিজ ধর্মে ফিরে গেলে হাত-পা বেঁধে তাকে হত্যা করা হয় (বুখারী-৪০০০), মৃত্যুর আগে রোগশয্যায় নবী বলেছিলেন, হে আল্লাহ ইহুদীদের ও নাসারাদের উপর লানত বর্ষণ করুন (বুখারী-৪০৯১-২), নবী ইহুদীদের এজন্যে ধ্বংস হওয়ার বদদোয়া করেছেন যে, তারা গরু ও শুকরের চর্বি গলিয়ে বিক্রি করে (বুখারী-৪২৭২), ইহুদীদের নিখোঁজ একদল লোককে নবী ইঁদুর [বিবর্তিত আকৃতিতে] বলে সনাক্ত করেন, কারণ ইঁদুর উটের দুধ পান করেনা কিন্তু ছাগলের দুধ পান করে (বুখারী-৩০৬১), বনী ইসরাইল না হলে মাংসে পচন ধরতো না, কারণ তারা ‘সালওয়া’ নামক পাখির মাংস জমা করেছিল (বুখারী-৩০৮৪), নবী বলেছেন, তোমরা ইহুদী ও নাসারাদের পদে পদে অনুসরণ করবে, এমনকি তারা যদি গুই সাপের গর্তেও ঢুকে থাকে তোমরাও তাতে ঢুকবে (বুখারী-৩১৯৮), ইহুদী-খ্রীস্টানদের প্রথমে সালাম দিওনা, রাস্তায় দেখা হলে তাকে রাস্তার পাশে ঠেলে দিও (তিরমিযী-১৫৪৯), হেযাজের ইহুদী ব্যবসায়ী আবু রাফে’কে নবীর নির্দেশে ঘুমন্ত অবস্থায় মুসলিম আবদুল্লাহ ইবনে আতিক ও বনী কুরাইযা গোত্রের ইহুদী কবি কা’ব ইবনে আশরাফকে মুসলিম মুহাম্মাদ ইবনে মাসলামা ধোকার আশ্রয় নিয়ে হত্যা করেন। সরল বিশ্বাসে ইহুদী কবি কা’ব মুহাম্মাদ ইবনে মাসলামার সামনে এলে মুহাম্মাদ ইবনে মাসলামা তার চুলের সুগন্ধির প্রশংসা করে তার চুলের ঘ্রাণ নেয়ার অনুমতি চান। কবি কা’ব সরল বিশ্বাসে ঘ্রাণ নিতে সম্মতি দিলে ধোকায় ফেলে মুহাম্মাদ ইবনে মাসলামা তার চুল আকড়ে ধরেন এবং সঙ্গীদের সহায়তায় তাকে হত্যা করেন (বুখারী-২৮০০-১,৬,৩৭৩৫-৬), এক কৃষকের ঘরে কৃষিকাজের লাঙ্গল-জোয়াল দেখে নবী মুহাম্মদ বলেছিলেন, এটা (কৃষি যন্ত্রপাতি) যে জাতির ঘরে প্রবেশ করে আলস্নাহ সেখানে হীনতা ও নীচতা ঢুকিয়ে দেন (বুখারী-২১৫৩) [ঐ সময়ের ঈহুদীদের প্রধান পেশা ছিল কৃষি], জিহাদ পরিত্যাগ করে কৃষিকাজে নিমগ্ন থাকলে আলস্নাহ তাকে অপমান করবেন (দাউদ-৩৪২৬), কোরানে ‘ইহুদী ও খ্রীস্টানদের সাথে বন্ধুত্ব নিষিদ্ধ করা হয়েছে’ (কোরান-৫:৫১), ইহুদী-খ্রীস্টানরা চুল রঞ্জিত করেনা সুতরাং তোমরা তাদের বিপরীত করো (বুখারী-৫৪৭০), একজন ইহুদী ওমরকে বলেছিল, ‘আজ আমি তোমার দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম’ এমন আয়াত আমাদের সম্পর্কে নাযিল হলে ঐদিনকে আমরা ‘ঈদ’ হিসেবে পালন করতাম (বুখারী-৪২৪৫), নবী নাজরানের খ্রীস্টানদের সাথে চুক্তি করেন যে, খ্রীস্টানদের গীর্জা ধ্বংস ও পাদ্রীদের বের করে দেয়া হবেনা কিন্তু বিনিময়ে নবীকে ১০০০-জোড়া কাপড় সফর মাসে ও ১০০০-জোড়া রজব মাসে খ্রীস্টানরা পাঠাবে; তা ছাড়া ৩০টি বর্ম, ৩০টি ঘোড়া, ৩০টি উট এবং সব ধরণের যুদ্ধোপকরণ ধার হিসেবে মুসলমানদের দেয়া হবে কিন্তু খ্রীস্টানরা সুদ খাওয়া শুরু করলে তাদেরকে নাজরান থেকে বহিস্কার করা হয় (দাউদ-৩০৩১), নবী (স) তার বাড়ি ও মসজিদ ইহুদী বনু নাজ্জার গোত্রের যায়গায় নির্মাণ করেন। এজন্য নবী মূল্য দিতে চাইলে ইহুদীরা বলে, ‘‘আমরা আল্লাহর নিকট এর মূল্য বা প্রতিদান কামনা করি(মুসলিম-১০৫৬), নবী (স) মদীনায় মসজিদ বানানোর জন্য ইহুদী বনু নাজ্জার গোত্র থেকে জমি নিয়ে তার দাম দিতে চাইলে ইহুদীরা বললো, ‘‘আমরা এর মূল্য একমাত্র আল্লাহর নিকট কামনা করি(বুখারী-২৫৭০), নবী (স) মদিনায় গিয়ে তার বাসস্থান ও প্রথম মসজিদ ইহুদী বনু নাজ্জার গোত্রের পুরণো কবরস্থান, খেজুর বাগান ও কৃষিক্ষেত্র পরিস্কার করে তাতে স্থাপন করেন। কবরগুলো খুড়ে তার গলিত লাশ সরিয়ে ফেলা হয়। ইহুদীদের বর্ণিত জমির মূল্য পরিশোধ করতে চাইলে তারা বলে, ‘‘এর বিনিময় তারা পরকালে আল্লাহর নিকট থেকে চায়(আবুদাউদ-৪৫৩-৪)’’।
                
প্রাচীন ও মধ্যযুগে এমনকি আজকের দিনেও ‘‘জোর যার মুল্লুক তার’’ নীতিতে বিশ্বের শক্তিমান দেশগুলো দখল করেছে বা করছে ছোট দেশগুলোকে। ইসরাইল জাতি বিশ্বের কোনো দেশ কখনো দখল করেছিল এমন ইতিহাস পাওয়া যায়নি। আধুনিক ইসরাইল রাষ্ট্রটিও প্রতিষ্ঠা হয়েছে জাতিসংঘের একটি ম্যান্ডেট নিয়ে। অথচ দেখা যাবে, পৃথিবীর আধুনিক গণতান্ত্রিক-রাজতান্ত্রিক-সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো প্রতিষ্ঠার ইতিহাস আসলে নানাবিধ রক্ত আর যুদ্ধ-বিগ্রহের। অধিকাংশ ইহুদি ইউরোপ থেকে ফিলিস্তিনে এসে আরবদের থেকে জমি কিনে ঘরবাড়ি বানাতে শুরু করেছিল ১৯৪৮-এর পর। জলাভূমি ভরাট করে ইহুদিরা তেলআবিব শহর গড়ে তোলে। হাজার বছর পর পাওয়া জন্মভূমি তাদের জীবনের চেয়েও প্রিয় এখন। ১৮৭৮-সনে প্যালেস্টাইনে  ৪,৬২,৪৬৫ জন মুসলমান, খ্রীস্টান ও ইহুদীরা একত্রে বসবাস করতো। তাহলে এখন সমস্যা কোথায়? মধ্যপ্রাচ্যের ৯৯% জমি এখন মুসলমানদের দখলে। নিজ মাতৃভূমি কেনান তথা ইসরাইলে থাকতে পারবে না ইহুদিরা? তবে তাদের বাসভূমি হবে কোন্ গ্রহে? একুশ শতকের ‘‘আগ্রাসী’’ ইসরাইল কিন্তু আক্রমন করছে না বিশ্বের অন্য কোন দেশ, কেবল তাদের দেশ যারা ধ্বংস করতে চাইছে তাদের ছাড়া! এ কাজটি এখন কোন্ রাষ্ট্র করছে না? শান্তিপ্রিয় ক্ষুদ্র রাষ্ট্র বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি প্রদানকারী রাষ্ট্রের ব্যাপারে বাংলাদেশ কি করবে? ছাড় দেবে তাকে? একাত্তরে পাকিস্তানকে দিয়েছিল কিংবা এখন দেবে কাউকে স্বাধীনতার প্রশ্নে?
                     
এবং তাই ইহুদি-মুসলিম সংঘাত অবসানে দরকার যুক্তিশীলতা আর মননের সেটআপ পরিবর্তনের। বিশ্বের সকল মানুষের মত মুসলমানরা যেদিন বুঝবে, তাদের মতো এবং পৃথিবীর অন্য সকল প্রজাতির মত একটি মানব জাতি হিসেবে ইহুদিদেরও পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার আছে, সেদিন পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে, অন্যথায় প্রত্যহ মরতে থাকবে গাজা, সিনাই, পশ্চিমতীর, গোলান মালভূমি, রামাল্লা, তেলআবিব, জেরুজালেম আর হাইফার মানুষ, হতে পারে জাতিগতভাবে তা মুসলিম কিংবা ইহুদি। যদিও উভয় জাতির রক্তই আসলে একই বর্ণের!
                     
[ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে গ্রামের বাড়ি ও অন্যবিধ কাজে ব্যস্ত থাকাতে অনেকদিন ব্লগের বাইরে থাকতে হয়েছে, এ জন্যে দু:খিত, ইহুদি বিষয়ক এটিই শেষ পর্ব]
 l                 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন