শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ইসলামে টেম্পোরারি মুতা বিবাহ : (ধর্ম বিষয়ক পোস্ট # ৪৮)

বৈশ্বিক সপ্তপদি ধর্মের অষ্টপদি বিস্ময়কর ধর্মকথার সিরিজ : ০২৪
:
ইসলামে টেম্পোরারি মুতা বিবাহ 
:
মুতা বিবাহ একটি স্বল্প সময়ের বিবাহ। অর্থাৎ কোন নারী ও পুরুষ অল্প কিছু সময়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ বিবাহ করতে পারে। তবে এই সময় সম্পর্কে কোন সর্বনিম্ম বা সর্বোচ্চ সময় বাধা ধরা নাই। যেমন: ১ ঘন্টা বা এক দিনের জন্য ও চাইলে কোন পুরুষ/নারীর সাথে বা কোন নারী/পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।
:
সহজ ভাষায়, এক রাত্রির বিয়ের ইসলামি পরিভাষায় নাম হলো মূতা বিবাহ। এই বিয়ের প্রথা হলো একজন পুরুষ কোন মেয়ের সাথে স্বল্প সময়ের জন্য বিয়ের চুক্তি করে তার সাথে সঙ্গম করতে পারবে। সুন্নী ইসলামে মুতা বিবাহ নিষিদ্ধ, তবে শিয়া ইসলামদের মধ্যে এটা এখনো প্রচলিত আছে। একসাথে একজন মুসলিম চার স্ত্রীর বেশি রাখতে পারে না কিন্তু মুতা বিয়ের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়। মুতা বিয়ের মাধ্যমে একজন মুসলমান ইচ্ছে করলে যে কোন নারীর সাথে সঙ্গমসুখ লাভ করতে পারবে। মুতা বিবাহে কোন কাজী বা সাক্ষীর প্রয়োজন হয় না। কয়েকটি আয়াত পাঠের মাধমে এ বিবাহ সম্পন্ন করা হয় এবং এ বিয়ের কোন তালাক নেই।
:
মুতা বিয়ে সংক্রান্ত ইসলামি প্রমাণাদি :

১. জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ বর্ণিত: সামান্য কিছু খাদ্য বা অন্য কিছুর বিনিময়ে আমরা নবীর আমলে সাময়িক বিয়ে করতাম, এটা আবু বকরের আমলেও আমরা এটা করতাম তবে ওমর এটা নিষেধ করে দেন। [ সহীহ মুসলিম: হাদিস নং ৩২৪৯]
:
২ .সালামা ইবনে আল আকবা ও জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ বর্ণিত: আল্লাহর নবী আমাদের কাছে আসলেন ও সাময়িক বিয়ের অনুমতি প্রদান করলেন। [সহীহ মুসলিম: হাদিস নং ৩২৪৭ ]
:
৩. রাবি বিন ছাবরা হতে বর্নিত হয়েছে যে, মক্কা বিজয়ের সময় তার পিতা রাসুলুল্লাহর সাথে এক যুদ্ধে শরীক হয়। আমরা সেখানে পনের দিন অবস্থান করি। আল্লাহর রাসূল আমাদের অস্থায়ী বিয়ের অনুমতি দেন। আমি আমারই গোত্রের এক লোকের সাথে মেয়ে খুজতে বেড়িয়ে পড়ি। আমার সঙ্গীর চেয়ে আমি দেখতে সুন্দর ছিলাম, পক্ষান্তরে সে ছিলো কদাকার। আমাদের উভয়েরই পরনে ছিল একটি উত্তরীয়। আমার উত্তরীয়টি ছিলো জীর্ন অন্যদিকে আমার সঙ্গীর ছিলো একবোরে নতুন। শহরের একপ্রান্তে একটি মেয়ে দৃষ্টি গোচর হলো আমাদের। অল্প বয়সী মেয়ে, ঠিক যেন মরাল গ্রীবা চটপটে এক মাদী উট। আমরা বললাম আমাদের মধ্যে একজন তোমার সাথে অস্থায়ী বিয়ের চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চাই। তা কি সম্ভব? সে বলল তোমরা আমাকে কী দিতে পার। আমরা উভয়েই আমাদের স্ব স্ব উত্তরীয় মেলে ধরলাম। সে আমাদের উপর দৃষ্টি বুলিয়ে নিলো। আমার সঙ্গী মেয়েটির উপরও দৃষ্টি বুলিয়ে নিলো এবং বললো পুরাতনটি গ্রহন করায় ক্ষতি নাই। সুতরাং আমি তার সাথে অস্থায়ী বিয়ে সম্পন্ন করলাম। [ সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৩২৫৩]
:
৪. ইবনে উরাইজ বর্ণিত: আতি বর্ণিত যে জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ উমরা পালনের জন্য আসল এবং আমরা কিছু লোক তার কাছে গেলাম ও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন- আমরা নবীর আমলে সাময়িক বিয়ে করে আনন্দ করতাম ও এটা আবু বকর ও ওমরের আমল পর্যন্ত চালু ছিল। [ সহীহ মুসলিম: হাদিস নং ৩২৪৮]
:
তবে পরবর্তীতে সুন্নী ইসলামে মুতা বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নবীর মক্কা বিজয়ের কিছু সময় পর এটি নিষিদ্ব করা হয় এবং খলিফা হযরত ওমর -এর রাজত্বকালে এটি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ব করা হয়। তবে শিয়া ইসলামে এ বিবাহ আজো প্রচলিত রয়েছে। ২০১৩ সালে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান সরকার সে দেশে মুতা বিবাহের আড়ালে “বৈধ বেশ্যালয়” স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে। এই ব্যবস্থায় নির্দিস্ট লোকালয়ে একদিনের জন্য বিয়ের অনুমতি দিয়েছে ইরান সরকার। এই ব্যবস্থা অনুযায়ী যেকোন ইরানী কিংবা বিদেশী নির্দিষ্ট বেশ্যালয়ে যেয়ে ঐ মেয়ের সম্মতিতে একদিনের জন্য বিয়ে করে তার সাথে সেক্স করতে পারবে। বিয়ের ছাড়া সেক্স করলে ইরানে ১০০ বেত্রাঘাত থেকে শুরু করে মৃত্যুদন্ড দেয়া পর্যন্ত বিধান আছে। শিয়া ইসলাম অনুযায়ী এই ধরণের বিয়েকে মুতা বিয়ে বলে। সরকার কতৃক এই স্বীকৃতির পর এখন যে কেউ হালাল উপায়ে নারী-সম্ভোগ করতে পারবে মাত্র ২০ থেকে ৫০ ডলার এর বিনিময়ে। কুমারী, সুন্দরী এ সব ভেদে উক্ত যৌন-সম্ভোগ এর মূল্যমান বিভিন্ন হতে পারে। যৌন-সম্ভোগ শেষে আবার আরো একটি কাগজে তালাক সই করে বাড়ি চলে যেতে কোন অসুবিধা নাই। ইরানে এমনটা অনেকদিন ধরেই চলে আসছিল, এই প্রথম পেল রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।
:
কারো মতে নবী যে মুতা নিষিধ্ব করেননি তার সুস্পষ্ট প্রমান হলো এই যে,বোখারী ইমরান বিন হাসিন থেকে বর্ননা করেন, “তিনি বলেন,মুতার আয়াত আল্লাহর কিতাবে নাযিল হয়েছিল,আমরাও রাসুলের(সাঃ) সময় এর উপর আমল করেছিলাম।কখনোই তা নিষিধ্ব করে আয়াত নাজিল হয়নি এবং রাসুল(সাঃ) ইন্তেকাল পর্যন্ত তা নিষিধ্ব করেননি।কিন্তু ২য় খলিফা তা নিষিধ্ব করেন( বুখারী ৬/২৭,তাফসীর অধ্যায়,সুরা বাকারার ১৯৬নং আয়াতের তাফসীর)। 
:
ওহ ঈশ্বর, ভগবান, খোদা, জিউস, পসাইডন, বুদ্ধ, গড, যিশু, মোজেজ, আল্লাহ, যিহোবা, শিব, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, নির্ধামিকের গড(জুকারবার্গ), কনফুসিয়াস, জরথ্রুস্ট, শিন্টো কামি কই যাই ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন