ইসলাম ধর্ম : পর্ব # ২
[১ম পর্বের পর]
ইসলামের নবী মুহম্মদের বংশ ও জন্ম ইতিহাস সম্পর্কে কথিত ছিল, খ্রীস্টপূর্ব ২১০০ সনে ইব্রাহিমের জন্ম হয়েছিল ইরাকের বাবেল অঞ্চলের ‘ওর’ নামক বস্তিতে। তাওরাতে ইব্রাহিমের পিতার নাম তারেখ, আর কোরানে ‘আযর’। পিতা আযর ছিল কুমার পেশার মূর্তি নির্মাতা ও পূজক জাহান্নামী, বাদশা নমরুদের আমলে যার বসবাস। সিরিয়ার ধনীকন্যা সারা নিজ পছন্দে ইব্রাহিমকে স্বয়ম্বর পদ্ধতিতে বিয়ে করেন। ঘটনাক্রমে মিশর-রাজ হাজেরাকে দাসী হিসেবে সারা-ইব্রাহিমকে উপহার দেন। সারার গর্ভে ইসহাক ও হাজেরার গর্ভে ইসমাইলের জন্ম হয়।
ইসহাকের পুত্র ইয়াকুব যার অপর নাম ইসরাইল, এদের বংশের লোকেরাই ছিল বনী ইসরাইল। এই বংশধারার নবীরা ছিলেন যথাক্রমে ইসহাক, ইয়াকুব, ইউসুফ, আইউব, মুসা, হারুন, ইউনুস, দাউদ, সোলায়মান, লোকমান, জাকারিয়া, ইয়াহায়্যা ও ঈসা। ইসমাইলের বংশধারায় কুরাইশ বংশ এবং নবী মুহাম্মদের জন্ম। ২-বছর বয়সে ইসমাইল বিবি হাজেরার সঙ্গে নির্বাসিত হন ও ৭-বছর বয়সে তার কোরবানীর ঘটনা ঘটে। ১৪-বছর বয়সে ইসমাইলের বিয়ে হয় জোরহাম গোত্রের এক মেয়ের সঙ্গে। ১ম স্ত্রীকে পিতা ইব্রাহিমের নির্দেশে ইসমাইল ত্যাগ করেন, তার ২য় স্ত্রীর নাম ছিল বিবি সাঈদা। ৩০-বছর বয়সে পিতা-পুত্র কাবাঘর নির্মাণে হাত দেন। নবী সোলায়মান পরবর্তীতে কাবাঘর পুন. নির্মাণ করেন।
ইব্রাহিম থেকেই মূলত হজ্জের প্রচলন শুরু হয়। আরব ও ইসরাইলী উভয় দলেই হজ্জ, কোরবানী, খাতনা, রোজা, কিসাস (হত্যার পরিবর্তে হত্যা, চোখের পরিবর্তে চোখ ইত্যাদি) উত্তরাধিকার আইন, দাফন-কাফন প্রায় একই প্রকার ছিল। কারো মতে, কোরাইশ এক প্রকার শক্তিশালী সামুদ্রিক প্রাণির নাম ছিল, এই প্রাণির নাম অনুসারে কোরাইশ বংশের নাম রাখা হয়। আবার কুসাই একত্রে সকলকে সমবেত করেছিলেন বলে এ বংশধারার নাম কুরাইশ বা সমবেত করা। কুসাই মৃত্যুকালে কাবাঘরের দায়িত্ব আব্দুদ্দারকে প্রদান করেন। এর থেকে নেতৃত্ব আসে আব্দ মান্নাফের উপর। কাবাঘরের কর্তৃত্ব নিয়ে আব্দ মান্নাফের ৬-পুত্রের মধ্যে ঝগড়ার পরিণতিতে হাজীদের পানাহারের দায়িত্ব পান হাশেম। হাশেম কর্মদক্ষ ছিলেন বিধায় রোম সম্রাট তাকে বিনা শুল্কে তার দেশে বাণিজ্যের আমন্ত্রণ জানান।
হাশেম ঘটনাক্রমে মদীনার বনী নাজ্জার গোত্রের মেয়ে সালমাকে বিয়ে করেন, যার গর্ভের পুত্রের নাম ছিল শাইবা। গাজায় হাশেমের মৃত্যু হলে ভাই মুত্তালিব মদীনা থেকে ভাইপো শাইবাকে মক্কায় নিয়ে এসে নাম রাখেন আব্দুল মুত্তালিব। আব্দুল মুত্তালিব যমযম কুপের পুন.খনন ও সংস্কার করেন ও এর অধিকার লাভ করেন। আব্দুল মুত্তালিবের পুত্রদের মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিল আবু লাহাব, আবু তালিব, আবদুল্লাহ, হামযা ও আববাস। কুরাইশ বংশের অপর গোত্র বনী যোহরার সর্দার ওয়াহাবের মেয়ে আমেনার সঙ্গে আবদুল্লার বিয়ে হয় এবং নবী মুহাম্মদের জন্ম হয়। মদিনাতে অকালে মাত্র ২৫-৩০ বছর বয়সে আবদুল্লাহর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর সময় সে অন্যান্য কিছু সম্পদের সঙ্গে দাসী উম্মে আয়মন বা বারাকাকে রেখে গিয়েছিলেন, যার সঙ্গে পরবর্তীতে পালকপুত্র যায়েদের সঙ্গে বিয়ে দেন। দুধমাতা হালিমার ছাগল চড়ানোর সময় জিব্রাইল ১ম বার নবীর বক্ষ বিদারণ করে শয়তানী অংশ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করেন। এ ছাড়াও ওহি প্রাপ্তি ও মিরাজের সময়ও নবী মুহম্মদের বক্ষ বিদারণ করা হয়েছিল।
লেখাটি ফেসবুকে দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যান প্লিজ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন